Bosonto Porag by Mizanur Rahman Shamsheri, মিজানুর রহমান শমশেরী (uplifting book club books .TXT) 📖
Book online «Bosonto Porag by Mizanur Rahman Shamsheri, মিজানুর রহমান শমশেরী (uplifting book club books .TXT) 📖». Author Mizanur Rahman Shamsheri, মিজানুর রহমান শমশেরী
এইখানে এক রাতের শেষে শিশির-ঝরা প্রাতে
মেললে তোমার ছল, দেবীর দুয়ার হতে
আসলো নিমন্ত্রণ
অলিকূলে ভিড় জমাতে করলো আমন্ত্রণ।
ডাকলো তোমায় দূর আকাশের রাঙা আলোর ফালি
তোমার রঙে রঙ ছড়াতে ভুবন দিল তালি,
রইলে প্রেমের বন্ধনে
শিউলি ঝরা কোন সে রূপে কুঞ্জবনের প্রাঙ্গণে।
ফাগুন এসে বরণ-ডালাখানি পরালো তোর গলে
শরৎ এসে টিপ পরালো শিউলিবনের তলে
মৌমাছিদের গুঞ্জনে
বেলা তোমার ফুরিয়ে গেল কুঞ্জবনের প্রাঙ্গণে।
যদি বলোযদি বলো- আর কোনোদিন লিখবো না
লিখবো না একটি চিঠিও,
আমার চিঠির ধূসর পাণ্ডুলিপি
আমাকে তুমি ফিরিয়ে দিও।
যদি বলো- আর কোনোদিন লিখবো না।।
যদি বলো- ভুলে যাব অতীতের মশক তাড়ানো রাত,
আর যদি বলো তুমি- তোমাকেই ভুলে যাব অকস্মাৎ
তোমাকেই ভুলে যাব,
স্মরণের চেয়ে ভুলে যাওয়া শ্রেয়- দেখো নি ভুলেছি কত!
নক্ষত্রের আকাশ থেকে ঝরে পড়া একটি তারার মতো
যে আমার কাছে ছিল।
যদি বলো- ভুলে যাব পৃথিবীর গীতিময় সুর,
আর যদি বলো চলে যেতে মোরে- চলে যাব বহুদূর।
যদি তুমি চেয়ে থাকো পাখির নীড়ের মতো চোখ করে ভার,
তবু আমি আসিব না, আসিব না, কোনোদিন আসিব না আর।
শেষ কবিতাশত বেদনার অঙ্কুর বুকে চলিনু বন্ধুগণ
যে কথা কখনো বলিতে পারি নি, বলি তা কিছুক্ষণ।
সেই শুভদিনে লুটাবো ধুলায়- শুনে রাখো মোর বাণী,
যারা ছিলে মোর বন্ধু সুদিনে- ফেলো না চোখের পানি।
অশ্রুতে নয়, ক্রন্দনে নয়, ভালোবাসা দিয়ে মোরে
সুজন বন্ধু তোমরা আমারে বেঁধে রেখো প্রেম-ডোরে।
যেখানে নরম ঘাসের সবুজে নিশীথে জোনাক জ্বলে
বিটপীর শাখে যেখানে পাখিরা অনন্ত কথা বলে,
যেখানে বাতাস ধীরে বহে ধীরে- সন্ধ্যা যেখানে আনে
বন্ধু আমার সুখের বাসর বেঁধে দিও সেইখানে।
যে রাতে চলিব সুদূরের পথে জ্বালিয়ে আগরবাতি
বন্ধু আমার বিদায়-শ্রাদ্ধ করে দিও রাতারাতি।
দিনের আলোকে যন্ত্রণা আনে, রাতের আঁধারে ঘুম,
জোছনার সাথে মঞ্জরীগুলো যখন খাইবে চুম,
গোসল করাতে হবে না বন্ধু, হবে না কাফন দিতে
কখনো তো আর আসিব না এই মানুষের পৃথিবীতে।
আতর-গোলাপ মাখিলে কী হবে, কবরে ঢাকিবে দেহ,
তোমরা যে মোর বন্ধু স্বজন যাইবে না সাথে কেহ।
বাসর শয়নে ঘুমুবো যখন, ঘুমুবো অহর্নিশি,
সে ঘুম ভাঙাতে যাবে না কখনো আজিকার প্রতিবেশী।
রাখি-বন্ধন খুলিবে বন্ধু, আর কিছু আনিবে না,
কী সুখে প্রহর কাটাবো সেখানে কেউ তাহা জানিবে না।
আকাশ মাটিতে ক্লান্ত বালক খেলেছি কত না খেলা,
সবকিছু তার ভুলে যাবো আমি- ভুলে যাবো এই বেলা।
আমি যে ঘুমুবো কবরের দেশে তবু তো আমার লাগি
তারকা ফুটিবে, চন্দ্র উঠিবে আকাশ রহিবে জাগি।
আমাকে খুঁজিয়া ক্লান্ত বাতাস ধানক্ষেতে দিবে নাড়া,
শিয়াল ডাকিবে কবরের পাশে, তবু তো দেবো না সাড়া।
পাষাণ গ্রথিতে বেঁধো না বন্ধু আমার কবরখানা,
শ্রাবণ-মেঘেরা ঢালে যদি জল, আহা কী যে সান্ত্বনা!
জোছনার সাথে ফোটে যদি কভু হাসনাহেনার দল,
নরম ঘাসের সবুজে সবুজে ভরিবে কবরতল।
ঝিঁঝির মেয়েরা কবরের পাশে গাহে যদি কভু গান,
ইঁদুর বেজিরা বুঝে নিবে তবু এখানে কবরস্থান।
আঁধার নিশীথে জ্বেলো না বন্ধু মোম কী মাটির দীপ,
আমি যে কখনো জাগিব না আর ঘুমিয়ে রহিব ক্লীব।
আসিব না আর তোমাদের সাথে কহিতে অনেক কথা
আমি যে বন্ধু বুকে টেনে নিব চিরন্তন নীরবতা।
রাতের আঁধারে ফুটিবে যখন আকাশে অনেক তারা
তারই সাথে মোর জেগে রবে কিছু ছোটো-খাটো বেদনারা।
মৌসুমি বায়ু আনে যদি কভু ফসলের কিছু তান,
তারই সাথে মোর শুনিবে বন্ধু জীবনের কিছু গান।
যে কথা শুনিতে জেগে রবে তুমি রাতের পরেতে রাত
ফাগুনের বনে পাখির কণ্ঠে শুনিবে অকস্মাৎ।
কেউ বুঝে নিবে, কেউ না বুঝে কাঁদিবে সেদিন জানি
তবু অনুরোধ কেঁদো না বন্ধু পুরোনো সে ব্যথা টানি।
যে ব্যথা ভুলিতে চলে গেছি আমি দূর হতে দূর দেশে
তোমরা সে কথা ভুলে যেও ভাই আমাকেই ভালোবেসে।
চোখের জলকেন এত কলরব!
নীরবে এসেছি আমি নীরবেই চলে যাব।
কণ্টকে গেঁথে এনেছি কুসুম পর কুসুম দামিনী,
এখনো জাগে নি কেউ নিশীথ নিঝুম যামিনী।
ফুল নিয়ে সখী জল দাও চোখে – জল নিয়ে ফিরে যাই,
আলোর স্বপন মিটুক আমার আজি এ আঁধারে যদিও হারাই।
বাসনা আমার অঞ্জন মাখা ওই কালো চোখে মন!
নীরব নিঝুম আঁধার নিশিতে চেয়ে থাকি কিছুক্ষণ।
ওই কালো চোখে মায়াবী তোমার কী মায়া জড়ানো যথাযথ
তারই বাসনায় মাঠের শিশিরে প্রতিদিন আঁকি ছায়াপথ।
প্রতিদিন যদি স্বপন জড়ানো এমন নিশীথ হতো-
প্রতিদিন যদি জল দিত কেউ এমনি তোমার মতো-
তাহলে হয়ত জলভরা চোখে হতভাগা এক কবি,
প্রিয়া রূপ তার হারাতো না বুঝি- হৃদয়ে আঁকিত ছবি।
মেয়ে গো – ফুল নিয়ে জল দাও, পুরো হোক মনোরথ
জলভরা চোখে ফিরে যাই আমি শিশিরে ভাঙিয়া পথ।
পথে যেতে যদি প্রজাপতি মেয়ে পথ আগলিয়ে ধরে,
‘আঁখি ভরা কেন এত জল কবি!’ প্রশ্ন যদি বা করে-
যদিবা সহসা রঞ্জিত পাখা আঁচলের মতো তুলে
মুছে যেতে চায় জলের ফোঁইয়ারা সহসা মনের ভুলে!
বাঁধ ভেঙে যাবে, বাঁধ ভেঙে যাবে! অথৈ সাগরস্থিত,
এত জল দেখে প্রজাপতি মেয়ে হবে না নিমজ্জিত।
ভরিবে না সখি এত জল পেয়ে শূন্য মনের কূঁইয়া,
সাহারা মরু কি ধন্য হবে না পেয়ে সে জলের ছোঁইয়া!
সাঁঝের বাগানে কুসুম কুড়ালে ব্যথা পায় অলি প্রাণে,
আমি যে কুসুম আনিয়াছি সখি, সন্ধ্যাতারা তা জানে।
অনেক মিনতি করেছি সখিরে- অনেক মিনতি করে,
কণ্টক দিয়ে কিনেছি কুসুম, এনেছি গো সাজি ভরে।
জল দাও সখী! ফুল দিয়ে জল দাও – আঁখিজল!
কেন এ অনীহা বনফুলে! আঁখি কেন টলমল!
পাষাণের চোখে এত জল কেন! এত জল কেন ওরে!
আজি এ নিশীথে কাঁদিতে এসেছি, কাঁদাতে আসি নি তোরে।
এই দেখো সখী, জল ভরা চোখে ফিরে যায় এক কবি,
যে স্বপনে তার প্রিয়ারে সাজাতো মুছে দিয়ে তার সবই।
কী গভীর দুঃখ নিয়ে শ্রাবণের মেঘ যায় ফিরে,
আমি তো সখীরে বোঝাতে পারি নি- বুঝে নিও আঁখি-নীরে।
দুটি মনও পাড়ার মেয়েটির শাড়ির আঁচলে
কখন যে বাঁধা পড়ে প্রজাপতি মন
যতো চাই সরে যেতে- ডেকে ডেকে বলে,
ওরে তুই হতভাগা, দাঁড়া কিছুক্ষণ।
সবুজ ঘাসের বনে প্রজাপতি ওড়ে
বিকেলের লাল রোদে রাঙানো অধর,
ও পাড়ার শ্যামলিনী ডাক দেয় দূরে,
হাত নেড়ে ডেকে কয়- আয়, বাঁধি ঘর।
নীড়হারা মন বলে, ধীর পায়ে চলো
ক্লান্তিতে ভরে গেছে অলস অধর
মেয়েটিরে ফিরায়ো না, ওরে কিছু বলো
এমনি তো কেটে গেলো তিরিশ বছর।
ঘরভাঙা মাছরাঙা গাংচিল পাখি
রঙিন মাছের বুকে মেরেছে ঠোকর
প্রজাপতি-মন মোর, নিমীলিত আঁখি
ডেকে কই- ঘরভাঙা, আয়, বাঁধি ঘর।
গাংচিল ডেকে কয়- ঘরমুখো হবি!
সহসা গুটিয়ে পাও মেলে দিয়ে পর
ডেকে ডেকে কয়ে গেলো- ফিরে যাও কবি
কেন আর পিছু ডাকো, কোথা পাবো ঘর!
এ অসীম শূন্যতা, ঘরভাঙা ঝড়
এমনি তো কেটে যায় হাজার বছর।
এই মাটি এই মনএখানে নরম মাটি কাদামাখা ঘোলা জল
আমি তো চাই নি সবুজ ফসলের মাঠ
চেয়েছিলাম বাদামি রঙের তামাটে ফসল
এবং অঘ্রাণের শীতের সকাল, উন্মুক্ত কপাট।
ফুল পাখি নদী জল কালো চোখ এলোচুলে
সাজানো হরিৎ ক্ষেত্র সুশোভিত নদীতটে
আমার বাসনা নেই; শুধু বলিষ্ঠ আঙ্গুলে
কাস্তে চেপে এঁকে যাবো ছবি আমার প্রচ্ছদপটে।
পাখি যদি গান গায়, কুমারী ধানের ক্ষেতে
জেগে থাকে প্রজাপতি রাতের শিশিরে
আমি শুধু দেখে যাবো দূর থেকে আলপথে
যেহেতু আমার মন মিশে আছে মাটির গভীরে।
কাঁচা মরিচের সবুজের মতো,
কুমারী ধানের মতো আছো নুয়ে,
আমার হৃদয়ে একান্ত নিবিড় হয়ে, একান্ত নিবিড়;
যেমনি নেতিয়ে থাকে মাচানে
পুঁইয়ের ডগা নিতান্ত স্থবির,
আশ্বিনের সোনাঝরা রৌদ্রটুকু চুয়ে চুয়ে।
তোমাকে দেখেছি আমি কার্তিকের প্রথম ফসলে
শালিকের ভিড়ে, ভাঙা উঠোনের পাশে,
যেখানে চড়ুই বসে বেগুনের ডালে।
কার্তিকের দারুণ রোদ্দুরে যখন কাস্তে হাতে মাঠে নামি,
তোমাকে দেখেছি সেইবেলা,
দেখেছি মাঠের পরে ধানশিষে ফড়িঙের প্রেম-প্রেম খেলা।
নতুন উদ্যমে মনে হয় পৃথিবীটা ধানক্ষেত :
সেখানে শালিকের মতো শুধু তুমি আর আমি।
মেঘআহা, কী বিশ্রী মেঘগুলো বার বার দেয় হানা
কাকেরা পালক ঝাড়ে- ভেঙে যায়
সূর্যের সোনালি রোদের ডানা।
প্রবল বর্ষণে কভু মুছে যায় ঘাসের শিশির
আহা, কী কাদায় লুটে সেফালি কুসুম
পথ চেয়ে যেন কোনো দূর প্রবাসীর।
আকাশে মেঘের আনাগোনা, সহসা বৃষ্টি হবে জানি,
নষ্ট করে দিয়ে যাবে সবুজ ঘাসের বনে
চঞ্চল হরিণীর চপল চাহনি।
The unity of form and content is what distinguishes poetry from other areas of creativity. However, this is precisely what titanic work implies.
Comments (0)