Short Story
Read books online » Short Story » Faisal Story by Md Ehsanul Haque Faisal, Md Enamul Haque, বাড়িয়ে দাও তোমার হাত, নোয়াখাইল্লা রঙ্গ (e ink ebook reader TXT) 📖

Book online «Faisal Story by Md Ehsanul Haque Faisal, Md Enamul Haque, বাড়িয়ে দাও তোমার হাত, নোয়াখাইল্লা রঙ্গ (e ink ebook reader TXT) 📖». Author Md Ehsanul Haque Faisal, Md Enamul Haque, বাড়িয়ে দাও তোমার হাত, নোয়াখাইল্লা রঙ্গ



1 2 3 4 5 6
Go to page:
মাত্র। সোফায় বসে পা মেলে টিভি দেখছে।

দুপুরে রান্না করতে গিয়ে বিপত্তিটা ঘটলো। কি রান্না করবে? কিভাবে করবে?? সবজি কিভাবে কাটবে কিছুই বুঝতে পারছেনা। একদম কোনঠাসা হয়ে পড়েছে। মেহের রান্নাঘরে গালে হাত দিয়ে বসে আছে। ওর ইচ্ছে করছে ফায়াজকে ধরে এনে চুলার সামনে দাড় করিয়ে দিতে।

মেহেরঃ - উফফ, কি জ্বালায় পড়লাম রে বাবা। এখন আমি কি করবো? বাইরে থেকে অর্ডার করে খাবার আনবো?? মেহের পাগল হয়েছিস?বাইরে থেকে খাবার আনলে ফায়াজ তোকে আস্ত চিবিয়ে খাবে। কার সাহায্য নেবো??

ওহহো আমার কাছে তো ফোন আছে। ইউটিউব দেখে রান্না করবো।

- মেহের ইউটিউবে দেখে সবজি কাটা শুরু করলো। ফায়াজ ভাবছে যাই একবার দেখে আসি। ফায়াজ পা টিপে টিপে কিচেনের দরজার সামনে গিয়ে উকি দিলো। উকি দিয়ে দেখে মেহের পেজাজ, টমেটো কাটছে। গলার ওড়না ডেক্সের উপর রেখেছে। ওর কপালে ও ঠোঁটের উপর বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে। মুখ লাল হয়ে আছে। চোখ দিয়ে হালকা পানি পড়ছে। পুরো চেহারায় বিরক্তির ছাপ।

ফায়াজের কলিজায় খচ করে উঠলো। ও আর ওখানে দাড়াতে পারলো না। বাড়ির বাইরে পুল সাইটে গিয়ে দাড়িয়ে রইলো। জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে তারপর নিজেকে নিজেই বলছে...

ফায়াজঃ - তুই কোনো ভুল করছিস না ফায়াজ। ও তোর সাথে কি করেছে ভুলে যাস না। ও তোর ভালোবাসা, বিশ্বাস, ইমোশন নিয়ে খেলেছে।

- মেহের রান্না করছে। ফায়াজ ল্যাপটপে বসে অফিসের কাজ করছে। ওর বাবা লন্ডনের বিজনেস সামলায়। ফায়াজকে দেশের বিজনেসের দায়িত্ব দিয়েছে।

মেহের তরকারি দেখছে তখনই ফায়াজ গলা ফাটিয়ে মেহেরকে ডাকছে।

ফায়াহঃ - মেহের, মেহের...

- মেহের কিছুটা বিরক্ত হলো। ফায়াজের সামনে গিয়ে বললো...

মেহেরঃ এমন ষাড়ের মতো চিল্লাচ্ছেন কেন?

- ফায়াজ কটমট করে ওর দিকে তাকালো। মেহের আমতা আমতা করে বলল...

মেহেরঃ না মানে, বলছিলাম এত জোরে চিৎকার করছিলেন কেন বলুন।

ফায়াজঃ - রুমে গিয়ে কাবার্ডে খোলে কালো রঙের একটা ফাইল আছে নিয়ে এসো।

- মেহেরের প্রচুর রাগ হচ্ছে। এমনিতেই পুরো বাড়ির কাজ মাথার উপর দিয়ে রেখেছে।

মেহেরঃ - এইটা তো আপনি ও আনতে পারেন। আমাকে না খাটালে আপনার ভালো লাগে না তাই না। যত্তসব। ইচ্ছে করছে রান্না ঘর থেকে লবণ এনে গলার ভিতর লবণ ঢেলে দেই।

- ফায়াজকে কিছু বলতে না দিয়ে হনহন করে চলে গেলো। ফায়াজ ফ্যালফ্যাল করে মেহেরের যাওয়ার দিকে চেয়ে রইলো। এই মেয়ে কি এসব আমাকে বলে গেলো। ফায়াজ লাঞ্চ করতে বসেছে। মেহের চিন্তাগ্রস্ত চেহারা নিয়ে দাড়িয়ে আছে। ফায়াজ এক লুকমা ভাত মুখে দিতেই থুম মেরে যায়। মেহেরের আর বুঝতে বাকি থাকে না কি হতে যাচ্ছে?

ফায়াক ওয়াক করে মুখ থেকে ভাত প্লেটে ফেলে দেয়। মেহের মাথা নিচু করে চোখ বন্ধ করে খিচ ধরে রয়েছে। ফায়াজ খাবার প্লেট ছুড়ে ফেলে দেয়। কাচের প্লেট ভেঙে ভাত মেঝেতে ছড়িয়ে পড়লো। মেহের কেপে উঠে। ফায়াজ চোখ মুখ শক্ত করে বললো...

ফায়াজঃ - এইসব কি রান্না করেছো? এইগুলো মানুষের খাবার? রাস্তার কুকুর ও এগুলো খাবে না। এগুলো খাইয়ে আমাকে মারতে চাইছো?

- মেহের মিনমিন করে বলে...

মেহেরঃ - আসলে এর আগে আমি কখনো রান্না করিনি। রান্না করা শিখিনি।

- এবার ফায়াজ আরো রেগে গেলো। দাতে দাত চেপে বললো...

ফায়াজঃ - তাহলে কি শিখেছ? কিভাবে ছেলেদের সাথে প্রতারণা করতে হয়? কিভাবে তাদের ঠকাতে হয়? কিভাবে তাদের জীবন নিয়ে খেলা যায়? এইগুলা শিখেছো?

- মেহের মাথা নিচু করে আছে। ফায়াজের কথাগুলো ওর কলিজাটা ছিন্ন ভিন্ন করে দিচ্ছে।

ফায়াজ উঠে চলে গেলো। গাড়ির চাবি নিয়ে বের হয়ে গেলো। গাড়ি স্টার্ট দিচ্ছে আর ভাবছে...

ফায়াজঃ - হায় আল্লাহ আমি কাকে শাস্তি দিচ্ছি? নিজেকে না মেহেরকে? এই মেয়েকে শাস্তি দিতে গিয়ে এই ভর দুপুরে খাবারের জন্য বাইরে ছুটছি। উফফ।

- ফাজ একটা রেস্টুরেন্টে বসে খাচ্ছে। অপরদিকে মেহের মেঝে থেকে ভাংগা কাচের টুকরো আর খাবার তুলে মেঝে পরিস্কার করছে। মেঝে পরিস্কার করে রান্না করা খারাবগুলো সব ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিলো।

ডাইনিং এ বসে অঝোর ধারায় কাদছে। আর বলছে...

মেহেরঃ - জীবনে প্রথম বার রান্না করলাম আর উনি....।।। মানলাম ভালো হয়নি তাই বলে এভাবে কথা শুনাবে। সব সময় কথা শুনানোর ইস্যু খোজে। সারাদিন এত কষ্ট করলাম এই রান্নার জন্য। উনি তো দেখেছেন কত কষ্ট করেছি।

- মেহের একা একা বলছে আর টিস্যু দিয়ে নাক মুছছে। তারপর নিজের মনেই হেসে দিলো।

মেহেরঃ - কিরে মেহের তুই তো দেখছি সেই দিনের মতো টিস্যু দিয়ে চোখ মুছার আগে নাক মুছছিস? তাহলে কি...

- কলিং বেল বেজে উঠলো। মেহের চোখ মুছে দরজা খোলে একটা ছেলেকে দাড়িয়ে থাকতে দেখলো।

থার্ড ছেলেঃ - মেডাম, এটা স্যার পাঠিয়েছে আপনার জন্য।

মেহেরঃ -ধন্যবাদ।

- মেহের খোলে ভিতরে কাচ্চি বিরিয়ানি দেখতে পেলো। সাথে পিজ্জা। মেহের অভিমানী কন্ঠে বললো...

মেহেরঃ --খাবো না আমি। আজকে কেউ আমাকে খাওয়াতে পারবেনা। ওই গুন্ডা বরও না। রান্নার জন্য খোটা দিবে আবার খাবার পাঠানো হচ্ছে।

- বিকেল বেলায় ভিডিও কলে মায়ের দেখানো মতো মেহের রান্না করেছে। মুরগির মাংস, রুই মাছ, ডাল, ভাজি, চিংড়ি মাছ রান্না করেছে। যদিও অনেক সময় লেগেছে। মেহের সবকিছু টেস্ট করে দেখেছে যদিও মায়ের হাতের রান্নার মতো সুস্বাদু হয়নি কিন্তু খারাপ হয়নি। মেহের নিজে নিজে বলছে....

মেহেরঃ - উফফ মেহের, জিও। তোকে নিয়ে এই প্রথম আমার গর্ব হচ্ছে। কি রান্না করেছিস। তোর বর এবার আর ছুরে মারবে না চেপেপুটে খাবে।

- কাজ শেষ করে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নিলো। চারদিকে অন্ধকার নেমেছে। মেহের বুঝতে পারলো রাত হয়ে এসেছে। হটাৎই ওর ভয়ভয় লাগছে এত বড় ফাকা বাড়িতে একা। গেটের সামনে দুজন ওয়াচম্যান ছাড়া আর কেউ নেই। বাসার পর বিরাট বড় পুল, বাগান তারপর গেইট।

মেহেরকে এই সুনশান নীরবতা গ্রাস করে ফেলছে। নিজের পায়ের শব্দেও বার বার চমকে উঠছে। মনে হচ্ছে এই বুঝি কেউ এসে ওর গলা চেপে ধরবে। ফায়াজেরও কোনো খবর নেই। ফোন করার সাহসও পাচ্ছেনা। রুমের দরজা লক করে এসির পাওয়ার বাড়িয়ে দিয়ে এই গরমেও কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে পরল। কিছুক্ষণ পর মেহের খচখচ শব্দ পেলো। মেহেরের সারা ভয়ে শরীর কাপছে।

 

 

 

পর্ব-৬

 

- ফায়াজ রুমে ঢুকে অবাক। এই গরমের মধ্যে মেহের কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। তারচেয়ে বেশি অবাক হলো রুমের এসি ফুল পাওয়ারে চলছে।

মেহের আস্তে আস্তে কম্বল সরিয়ে উকি দিলো। উকি দিয়ে ফায়াজকে দেখে এক টানে কম্বল ফেলে লাফিয়ে নেমে ফায়াজের কাছে এসে হাপাতে হাপাতে বললো...

মেহেরঃ - আপনি? আমি তো ভেবেছিলাম...

- ফায়াজ ভ্রু কুচকে বললো...

ফায়াজঃ - কি?

মেহেরঃ - কোনো দৈত্য দানব।

ফায়াজঃ - কিহ!! আমাকে দেখে তোমার দৈত্য দানব মনে হয়?

মেহেরঃ - নাহ, আপনাকে দেখে....

- মেহের থেমে গেলো তারপর বললো...

মেহেরঃ - আপনি রাতে দেরি করে ফিরবেন না। আমার ভয় করে।

ফায়াজঃ - আমাকে তোমার ভয় করে না?

মেহেরঃ - আপনি মানুষ। মানুষ আর ভূতপ্রেত, দৈত্য দানবের ভয় এক না। যাইহোক আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন। আমি খাবার দিচ্ছি।

ফায়াজঃ - খাবার? তোমার খাবার খেলে ডায়রিয়া বাধাতে চাইনা।

মেহেরঃ - আমি আবারো রান্না করেছি। ওতটা খারাপ হয়নি। খেয়ে দেখতে পারেন।

ফায়াজঃ - আমি রিক্স নিতে রাজী নই তাই বাইরে থেকে ডিনার করে এসেছি।

- মেহেরের মন খারাপ হয়ে গেলো। এত কষ্ট করে রান্না করলো আর ফায়াজ বাইরে থেকে খেয়ে এসেছে। দুপুরে খায়নি আর রাতে একসাথে খাবে বলে বসে আছে। মেহেরের ইচ্ছে হলো বেশ কিছু কথা শুনিয়ে দিতে কিন্তু কিছু না বলে শুধু বললো...

মেহেরঃ - ওওহ।

- মেহের আবারো শুয়ে পরলো। রাতেও খাবেনা। ফায়াজ ড্রিংক করবে। বোতল গ্লাস নিয়ে বসে পড়লো। তারপর মেহেরকে বললো...

ফায়াজঃ - মেহের, নিচে থেকে বরফ নিয়ে এসো।

- মেহেরের প্রচুর রাগ হলো। একদম তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো।

মেহেরঃ - পারবোনা। সারাদিন অনেক খাটিয়েছেন। অনেক কাজ করেছি। নিজেরটা নিজে নিয়ে খান। সারাদিন তো পায়ের উপর পা তুলে বসে ছিলেন, এবার একটু শরীর নাড়ান।

ফায়াজঃ - মেহের আমি তোমার কাছে এতো এডভাইস চাইনি জাস্ট বরফ চেয়েছি। যাও নিয়ে এসো।

মেহেরঃ - আমি কেন আনবো? আমি কি ড্রিংক করবো? আপনি করবেন আপনি আনেন।

ফায়াজঃ - এত কথা না বলে বরফ নিয়ে এসো নয়তো ভালো হবে না।

- মেহের লাফিয়ে উঠে বিছানায় বসলো...

ফায়াজঃ - কি করবেন? মারবেন? মারুন। যদি বলেন তো একটা লাঠি এনে দেই। আনবো?

- ফায়াজ ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল। কিছু না বলে নিজেই নিচে চলে গেলো। ফ্রিজে ওর পাঠানো খাবার দেখে ফায়াজের মেজাম বিগড়ে গেল।

তারপর ওর রান্না করা খাবার চেক করে বুঝতে পারলো মেহের সারাদিন খায়নি।

ফায়াজঃ - ওহহ, আচ্ছা। এই জন্য মেডামের মাথা এতো গরম। পেটে কিছু না পরলে তো মেজাজ খারাপ থাকবেই। তা একটু টেস্ট করে দেখি মেডাম কি রান্না করেছেন।

- ফায়াজ সব খাবার টেস্ট করে দেখলো। রান্না তো ভালোই করেছে। ফায়াজ বরফ না দিয়ে উপরে চলে গেলো।

ফায়াজঃ - মেহের উঠ, আমার ক্ষুধা লেগেছে।

মেহেরঃ - আমি ভালো করেই জানি আপনার ক্ষুদা লাগেনি। আমাকে উঠানোর জন্য বলছেন। আমি উঠবো না।

ফায়াজঃ - মেহের, আমি সত্যিই খাবো।

মেহেরঃ - নিয়ে খান। সব কিছুই আছে ইচ্ছে মতো নিয়ে খান।

ফায়াজঃ - তুমি উঠবে না?

মেহেরঃ - না।

- ফায়াজ আর কিছুনা বলে মেহেরকে টেনে তুলে কোলে নিয়ে হাটা ধরলো।

মেহেরঃ - কি করছেন ছাড়ুন। আমি পরে যাবো। আমাকে নামান আমি যাবো।

ফায়াজঃ - ভালোই ভালোই বলেছিলাম শুনোনি।

- ফায়াজ একদম ডাইনিং এর পাশে গিয়ে মেহেরকে নামালো। তারপর পানি খেয়ে হাপাতে হাপাতে বললো...

ফায়াজঃ - আটার বস্তা টেনে আমি শেষ।

- মেহের ভ্রু কুচকে তাকালো।

ফায়াজঃ - এভাবে পেচার মতো না করে খাবার দেও ক্ষুধা লেগেছে।

- মেহের খাবার বেড়ে দিলো।

ফায়াজঃ - তুমি দাড়িয়ে আছো কেন? এখন কি আমি তোমাকে খাবার বেড়ে দেবো? বসো, খেয়ে নেও।

- মেহেরের খুব ক্ষুধা পেয়েছে তাই খাওয়া শুরু করলো।

খাওয়া শেষে... মেহের শুয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর ফায়াজ রুমে এলো কারো সাথে ফোনে কথা বলছিলো। মেহের তখনও সজাগ। ফায়াজ এসে শুয়ে পরলো। তারপর মেহেরকে শুনিয়ে শুনিয়ে ফোনে কথা বলছে।

ফায়াজঃ - নো ডার্লিং, আমি তোমাকে ভুলতে পারি। কখনই না।

নো সুইটহার্ট, আমি সবাইকে ভুলতে পারি কিন্তু তোমাকে নয়।

- মেহের ফায়াজের কথা শুনে চমকে গেলো। ফায়াজ কোনো মেয়ের সাথে কথা বলছে এটা বুঝতে আর বাকি রইলো না। মেহের কান পেতে রেখেছে কনফার্ম হওয়ার জন্য। ফায়াজ বলছে....

ফায়াজঃ - ওকে কাল চলো মিট করি। আমাদের ৫ম ডেট। ওয়েট নিরা আমার একটা অফিস কল এসেছে। এখন রাখছি। উম্মাহ, বেবি।

- মেহেরের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। নিতু.. নামের একটা মেয়ের সাথে। আর এইভাবে কথা বলছে। মেয়েটা কে? কি সম্পর্ক? মেহের আর নিতে পারলো না। বুকের ভিতরের চাপা আর্তনাদ কান্না হয়ে জমে আছে। ওর চোখ বেয়ে পানি বেড়িয়ে এলো। পরের ফোন রিসিভ করে বললো,

ফায়াজঃ - হাই নিতু, জান কেমন আছো?

--

ফায়াজঃ - সরি অফিস কল ছিলো তাই ব্যস্ত পেয়েছো ফোন।

--

ফায়াজঃ - কাল সকালে মিট করি। সকাল ১০টায়। পরে লোকেশন জানাবো।

- মেহের কানের উপর বালিশ চেপে ধরলো। ও আর শুনতে চাইছেনা ফায়াজের কথা। ফায়াজ স্পষ্ট বুঝতে পারছে মেহের কাদছে। কিছুক্ষণ পর পর ওর শরীরের ঝাকিয়ে উঠছে। এটাই বুঝিয়ে দিচ্ছে মেহের কাদছে। ফায়াজ আরো জোরে বললো....

ফায়াজঃ - ওকে বেবি, গুড নাইট। আই লাভ ইউ। উম্মাহ।

- ফায়াজ মেহেরের দিকে তাকিয়ে একটা পৈচাশিক হাসি দিলো। তারপর চোখ বন্ধ করে বললো...

ফায়াজঃ - ভালোবাসো না তাই এতো কষ্ট হচ্ছে আর আমি ভালোবেসে কিভাবে সহ্য করেছি। তোমাকে কষ্ট পেতে দেখলে আমার প্রচুর আনন্দ হয়। তোমাকে এভাবেই কষ্ট দেবো। আমাকে তুমি অনেক কাদিয়েছো। তোমার জন্য কত রাত নির্ঘুম কাটিয়েছি। কিচ্ছু ভুলিনি আমি।চাইলেও ভুলতে পারবোনা।

- সকালে এলার্মের শব্দে ঘুম ভাংলো। মেহের সারারাত কেদেছে। মাথা ভারী হয়ে আছে। উঠতে ইচ্ছে করছে না তবুও উঠে গেলো। মুখ ভারী করেই নাস্তা বানালো। কফি নিয়ে রুমে এসে আরাফকে রুমে পেলো না কফিটা বেডসাইড টেবিলে রাখতেই ফায়াজের ফোন বেজে উঠলো।মেহের স্পষ্ট দেখছে নিতু নামটা। ওর গতকাল রাতের কথা মনে পড়ে গেলো। কেমন যেন থমকে গেলো। ওর খুব ইচ্ছে করছে ফোনটা রিসিভ করে শুনতে মেয়েটা কি বলে। ফায়াজকে কোথাও দেখা যাচ্ছেনা। মেহের ফোনটা হাতে নিতেই কোথায় থেকে এসে ছু মেরে ফোন কেরে নিলো ফায়াজ। তারপর মেহেরের দিকে অগ্নি দৃষ্টি ছুড়ে এক হাতে ওর দুহাত পিঠ বরাবর চেপে ধরে অন্য হাতে ফোন রিসিভ করলো। নিজের মুখটা মেহেরের কানের সামনে নিয়ে বললো...

ফায়াজঃ - নিতু,সুইটহার্ট। আমি আসছি জাস্ট ১৫মিনিট।

--

ফায়াজঃ - ওফফ লোকেশন জানাতে ভুলে গেছি। উমম, তুমি কি চাও? আমাদের ফার্স্ট ডেট কোথাও হওয়া উচিত?

--

ফায়াজঃ - তুমি যা চাইবে। রেস্টুরেন্ট অর হোটেল।

--

ফায়াজঃ - ওকে ডার্লিং আই এম কামিং। সি ইউ সুন।

- ফায়াজ ফোন রেখে মেহেরের হাত ছেড়ে সামনের দিকে ঘুরালো। তারপর মেহেরের গাল চেপে ধরে বললো...

ফায়াজঃ - তোমার সাহস কি করে হলো আমার ফোন হাত লাগানোর?

মেহেরঃ - বারবার বাজছিলো...

ফায়াজঃ - বারবার বাজুক। বাজতে বাজতে ডেড হয়ে যাক। তাতে তোমার কি? এর পর যদি আর কোনোদিন তোমাকে আমার ফোনে হাত দিতে দেখি, তোমার এই হাত আমি কেটে ফেলবো। এখন যাও কাবার্ট থেকে আমার এস কালার কোর্ট নিয়ে এসো। আর হুয়াইট কালার টিশার্ট, সু নিয়ে এসো।

- মেহের সব কিছু এনে দিলো। ফায়াজ সেগুলো পড়ে গায়ে পারফিউম লাগিয়ে, চুলে জেল দিয়ে, চোখে সানগ্লাস, হাতে ব্যান্ডের ওয়াচ পড়ে।

তারপর রেডি হয়ে বারবার ঘুরে ফিরে আয়নার দেখছে। মেহের সব কিছু আড়চোখে দেখছে। কষ্টে ওর বুক ফেটে যাচ্ছে। নিজের স্বামী অন্য কারো সাথে ডেটিংয়ে যাচ্ছে অথচ ওর কিছুই করার নেই। ফায়াজ আয়নার সামনে দাড়িয়ে মেহেরকে বলছে...

ফায়াজঃ - দেখো তো কেমন লাগছে? নিতুর সাথে ফার্স্ট ডেট আজকে। ভালো না লাগলে এই মেয়ে পটবে না। ওর অনেক ডিমান্ড।

মেহের কিছু না বলে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।

- ফায়াজ বাকা হেসে কারের চাবি নিয়ে বেরিয়ে গেলো।

- মেহের দড়জায় দাড়িয়ে ফায়াজের চলে যাওয়া দেখছে। তারপর গেইট বন্ধ করে ফ্লোরে বসে পড়লো। কয়েক সেকেন্ড স্তব্ধ থেকে চিৎকার করে কাদতে লাগলো...

মেহেরঃ - ফায়াজ, তুমি আমার সাথে এটা করতে পারোনা? তোমার জীবনে অন্য কেউ আছে এটা আমি মানতে পারবোনা? তুমি কি করে এতটা বদলে গেলে? তুমি পর-নারীতে আসক্ত এটা আমি কি করে মেনে নিবো? কোনো স্ত্রী ই এটা মেনে নিবেনা। তুমি আমাকে এত বড় শাস্তি দিতে পারোনা।

- একদম রাতের বেলায় ফায়াজ বাসায় ফিরেছে। মেহের টিভি ছেড়ে অন্যমনস্ক হয়ে বসে আছে। মেহের মুখ ভারী করে রেখেছে যা ফায়াজের চোখ এড়ায়নি। ফায়াজ এসেছে কিন্তু তাতে মেহেরের কোনো

1 2 3 4 5 6
Go to page:

Free ebook «Faisal Story by Md Ehsanul Haque Faisal, Md Enamul Haque, বাড়িয়ে দাও তোমার হাত, নোয়াখাইল্লা রঙ্গ (e ink ebook reader TXT) 📖» - read online now

Comments (0)

There are no comments yet. You can be the first!
Add a comment